
চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিআরটিএ কার্যালয় যেন ঘুষের হাট, বালুছড়ায় দুদকের সাড়ে ৩ ঘন্টার অভিযান
দুই হাজার থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেয়ার অভিযোগে চট্টগ্রামের বালুছড়া বিআরটিএতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ফিটনেস, লাইসেন্স, রুট পারমিটসহ নানা সেবায় ঘুষ বাণিজ্যের প্রমাণসহ দালালদের দৌরাত্ম্য উঠে আসে অভিযানে। চার ঘণ্টার অভিযানে কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও নথি তলব করে দুদক টিম।
আজ (বুধবার, ৭ মে) সকাল ১১টায় বালুছড়া বিআরটিএ অফিসে অভিযানে নামে দুদুক। প্রথমে সাদা পোশাকে কাজ পর্যবেক্ষণের পর ঢুকে পড়েন কর্মকর্তার অফিসে।
চলে নথিপত্র, ফাইল তদারকি ও জিজ্ঞাসাবাদ। দুদক জানায়, বিআরটিএ চট্টগ্রাম অফিসের বিরুদ্ধে হয়রানি, ঘুষ গ্রহণ, ফিটনেস লাইসেন্স প্রদান ও গাড়ির মালিকের নাম পরিবর্তনে অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অফিসের চার কর্মকর্তা ও কর্মচারী কাজভেদে সেবা প্রার্থী থেকে ২ হাজার থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ আদায় করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে জানায় দুদক। এরা হলেন, রায়হানা আক্তার অর্থি, টিপু সুলতান, সলিম উল্লাহ ও আবুদল মতিন। অভিযানের পর এসব কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসবাদ করা হয়
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকেই এখানে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ছিল। প্রায় দুই হাজার থেকে দুই লাখ টাকার ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ছিল। চারজন কর্মকর্তার লাইসেন্সের ডাটা নিয়েছি, আমরা এগুলো পরীক্ষা করবো। সে অনুযায়ী আমরা পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।’
এসময় বিআরটিএ অফিসে ডেকে আনা হয় সিএমপির ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. দিনারকে। অভিযোগ, তার স্ত্রীর নামে একটি মাইক্রোবাস আছে, যেটি রেজিস্ট্রেশন কারনো হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স হিসাবে। এতে শুল্ক ফাঁকি দিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে বিআরটিএ তাকে চিঠিও দিয়েছে। তবে ক্যামেরার সামনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন তিনি।
সিএমপির ট্রাফিক সার্জেন্ট দিনার বলেন, ‘এখন তো সবকিছু সহজ, আপনারা দুদক সবকিছু করবেন। আমার ওইরকম কিছুই নাই। আপনারা আমাকে জাস্টিফাই করেন, আমার পরিবারকে জাস্টিফাই করেন। আমার কী আছে না আছে, আপনারা জাস্টিফাই করেন। টা সম্পূর্ণ উদ্দেশ প্রণোদিত।’
মো. এমরান হোসেন বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সটা মাইক্রো হিসেবে উনি ব্যবহার করছেন। তার জন্য আমরা রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করেছি। আমরা তথ্য নিয়েছি এবং সার্জেন্টেরও বক্তব্য নিয়েছি। এটার সত্যতা পেয়েছি। এ বিষয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবো। সে অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নিবে।’
দুদক কর্মকর্তাদের দেখে ছুটে আসেন গ্রাহকরা। তুলে ধরেন দালালের দৌরাত্মসহ নান হয়রানি ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ।
তবে দালালের দৌরাত্ম্যের কথা স্বীকার করে উপ পরিচালক জানান, বিভিন্ন সময় দালালদের বিরুদ্ধে অভিযান চলে, তবে কার্যালয়ের ভেতরে নয়, তারা বাইরে অবস্থান করে। দালালের সহায়তা নেয়ায় গ্রাহকদেরও দোষ আছে বলে দাবি করেন তিনি।