যশোর প্রতিনিধিঃ যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের আব্দুলপুরে ইতি খাতুন কে জনসম্মুখে মারপিট ও জুতাপেটাসহ নির্যাতনের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে যশোর জেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন করে জেলাপ্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক ও নারীর ক্ষমতায়নে গঠিত গ্রাম সংগঠন পল্লীসমাজ, আইনজীবি, সমমনা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ২২ মার্চ ২০২২ রোজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত উক্ত মানববন্ধনে যশোর জেলা পরিষদের সামনে মানব বন্ধনে উপস্থিত ছিলেন এ্যাডঃ সেতারা খাতুন, বিশেষ পিপি, নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১,যশোর, এ্যাডঃ জেসমিন বানু, এ্যাডঃ শাহনাজ আক্তার, এ্যাডঃ লিয়াকত হোসেন বাবুল, এ্যাড আমিনুর রহমান হীরু।
ব্র্যাকের জিজেডি কর্মসূচির মো: সরোয়ার হোসেন, মো: নাহিদুজ্জামান, মো: মাসুম, সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচির জেলা ব্যবস্থাপক শংকর রায় চৌধুরী, ডেপুটি ম্যানেজার হারুন-অর-রশিদ, সমমনা সংগঠনের সদস্য, সাংবাদিক সহ ঝুমঝুমপুর ও হামিদপুর পল্লীসমাজের সদস্যবৃন্দ। এছাড়াও সোমবার বিকালে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ইউএনও মমতাজ বেগমের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন উপজেলার ব্র্যাক সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসুচির আওতাধীন রাড়ুলী ইউনিয়নের পল্লীসমাজের সভানেত্রী লিল্টু রানী।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ১৫ মার্চ ২০২২ ইং যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের আব্দুলপুরে একজন তরুণীকে জনসম্মুখে নির্যাতনের নৃশংসতম ঘটনা বরাবরের মতই আমাদেরকে স্তম্ভিত ও ক্ষুব্ধ করেছে। চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের (আব্দুলপুর, পোলতাডাঙ্গা ও সাজিয়ালী) জনপ্রতিনিধি (ইউপি সদস্য) আনিচুর রহমানের নেতৃত্বে ওই নারীকে নির্যাতন করা হয়। ইউনয়ন পরিষদের মতো একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির এহেন নেক্কারজনক ভূমিকা আমাদের বিস্মিত করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, নারীর প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন, নিপীড়ন, যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, মৌখিক হয়রানি, মানসিক নির্যাতন – এই সবই চূড়ান্ত বিচারে দেশের সার্বিক উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে নির্যাতনের মাঝে রেখে একটি সুস্থ সমাজ ও দেশ গড়ে উঠতে পারে না। আমরা দৃঢ়ভাবে এমন অবস্থার অবসান চাই।
সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, নারী-শিশু ধর্ষিত হলে সেই নারী বা শিশুকে প্রশ্নে জর্জরিত না করে কেন দেশে নির্যাতনের সংখ্যা বাড়ছে, সেটার দিকে মনযোগ দেওয়া দরকার। নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে তাদের প্রতি অধস্তন মনোভাব দূর করতে হবে, ভোগের মানসিকতা দূর করতে হবে। নারীদের পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে। সিনেমা, পোস্টার, নাটক, সাহিত্য ও ওয়াজ মহাফিলে তাদের অশ্লীলভাবে উপস্থাপন বন্ধ করতে হবে। মানববন্ধন শেষে জেলাপ্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য একই দাবিতে, যশোর ও সাতক্ষীরার ১০ টি পল্লীসমাজ গ্রামে একযোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।