ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ১৯৫তম পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত 

ডেস্ক রিপোর্ট : বৃষ্টির মধ্যে লাখ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ১৯৫তম পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ মে) সকাল ১০টার দিকে এ ময়দানে ঈদের নামাজে ইমামতি করেন শায়েখ শোয়াইব বিন আব্দুর রউফ।  ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা ফরীদ উদ্দিন মাসউদ ঈদ জামাতে ইমামতি করার কথা থাকলেও তিনি আর আসেননি।

রেওয়াজ অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে মুসল্লিদের সংকেত দিতে শর্টগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। গুলিগুলো তিনটি জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে, দুইটি ৩ মিনিট আগে এবং শেষটি জামাত শুরুর ১ মিনিট আগে ছোড়া হয়।বড় ঈদগাহ, বড় জামাত। বেশি মুসল্লির সঙ্গে জামাত আদায় করলে দোয়া কবুল হয়— এমনআকর্ষণে সকাল থেকেই শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য কিশোরগঞ্জ ও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে এসেছেন লাখ লাখ মুসল্লি।

এছাড়া দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের ঈদগাহ মাঠে আসার সুবিধার্থে ঈদের দিন সকালে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দুইটি স্পেশাল ট্রেন যাতায়াত করে।ঈদের নামাজ শেষে মোনাজাতে শায়েখ শোয়াইব বিন আব্দুর রউফ করোনার মহামারি থেকে বাংলাদেশকে রক্ষায় সরকারের কাজের জন্য মহান আল্লাহ কাছে শোকরিয়া করেন। সেই সঙ্গে দেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি-কল্যাণ ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শামীম আলম, জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ আফজল, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ, শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী প্রমুখসহ সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতারা ও সুধীজন।

এদিকে, ঈদগাহ ময়দানকে ঘিরে গড়ে তোলা হয় চার স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শহর এবং আশপাশের এলাকায় বাড়ানো হয় গোয়েন্দা নজরদারি।
বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় এক হাজার ৩০০ সদস্য দিয়ে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয় শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানকে। ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন ছাড়াও চারটি ড্রোন ঈদগাহের ভেতর ও বাইরের এলাকায় সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত থাকে।

ঈদগাহ ময়দানে মুসল্লিদের প্রবেশের জন্য মোট ২৩টি ফটকের মধ্যে পাঁচটি ফটকের প্রবেশপথ উন্মুক্ত রাখা হয়। এসব প্রবেশপথে স্থাপিত আর্চওয়ে দিয়ে মুসল্লিরা শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে ঈদগাহে প্রবেশ করেন।এর আগে তিন দফা মেটাল ডিটেক্টরে সবার দেহ তল্লাশি করা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে মুসল্লিদের কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শুধু জায়নামাজ নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয় তাদের।

স্থানীয়দের মতে, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’, এরপর ধীরে ধীরে সেই ‘সোয়া লাখিয়া’ পরিচিত হয়ে ওঠে শোলাকিয়া নামে। সুত্রঃ বাংলা নিউজ ২৪