ফুলবাড়ীয়ায় জমে উঠেছে গ্রামীণ পশুর হাট বেচাবিক্রিও স্বাভাবিক

 স্বপন ,ফুলবাড়ীয়া (ময়মনসিংহ) : আসন্ন ঈদ-উল আজহাকে সামনে রেখে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলায় জমতে শুরু করেছে গ্রামীণ কোরবানীর পশুরহাট। তবে বেচাকেনা এখনও সেভাবে জমে
উঠেনি। খামারী, ব্যবসায়ী , মৌসুমী পশুপালনকারী ও কৃষকরা বিভিন্ন পশুরহাটে কোরবানির পশু নিয়ে গেলেও বিক্রি হচ্ছে কম । অপর দিকে কোরবানীর হাটগুলো জমিয়ে তুলতে রং বেরং এর
প্যান দিয়ে গেইট নির্মাণ, মাইকিং করছেন ইজারাদাররা । খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফুলবাড়ীয়া উপজেলার উল্লেখযোগ্য স্থায়ী ও অস্থায়ী কোরবানীর পশুরহাটগুলো হচ্ছে ফুলবাড়ীয়া
সদর , কেশরগঞ্জ বাজার, আছিম বাজার , এনায়েতপুর বাজার, শিবগঞ্জ বাজার, দেওখলা বাজার , রাধাকানাই বাজার, কান্দানীয়া বাজার, সুয়ায়িতপুর বাজার , বালুঘাট বাজার , বাবুগঞ্জ বাজার , কাহালগাও বাজার । এর হাটের মধ্যে ফুলবাড়ীয়া ও কেশরগঞ্জ ও আছিম বাজার হচ্ছে কোরানীর পশুর সব চেয়ে বড় হাট । কেশরগঞ্জ বাজার বসে সপ্তাহে সোম ও শুক্র  বার আর ফুলবাড়ীয়া বাজার বসে রবি এবং বুধ বার ।
বৃৃহস্পতি বার এনায়েতপুর বাজারে পশু হাটে গিয়ে দেখা যায়, গরু মহিষ ও ছাগলের নিয়ে বসে আছেন খামারী ,কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। বাজারে লোক সমাগম হলেও বেচা বিক্রি কম। এ বছর এবার কোরবানীর পশু হিসাবে প্রধান্য পাচ্ছে স্থানীয় খামারে পালিত দেশি জাতের গরু ছাগল।

তবে যারা কিনতে আসছেন তারে শুরুতে দাম একটু বেশি বলে জানিয়েছেন। হাটের ইজারাদার মোশারফ হোসেন এর সাথে কথা বলে জানা যায়, হাটে পশু নিয়ে আসা সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার
জন্য মাইকের বলা হচ্ছে । বেচা বিক্রি এখন শুরু হয়নি। শেষের দিকে বিক্রি হওয়ার সম্বভাবনা রয়েছে । হাটে পশু আনা ব্যবসায়ী ও খামারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গো-খাদ্যের দাম বেশি থাকায় এবার খামারীদের খরচ একটু বেশি পড়ছে। ফলে গতবারের তুলনায় এবার গরু – ছাগলের দাম একটু বেশি পড়বে বলেও জানান তারা।গতবছর উপজেলায় চাহিদার চেয়ে কুরবানির পশুর পরিমাণ বেশি ছিল
এবং করোনার আয় রোজগার কম থাকায় অনেকেই কোরবানী দেয়নি । যে কারণে শেষের দিকে এসে অনেক খামারীকে লোকসান দিয়ে পশু বিক্রি করতে হয়েছে । এরকম বেশকিছু
খামারী লোকসানের কারণে এ ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। যারা অধিক খরচ করে খামার টিকিয়ে রেখেছেন, তারা এবার লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন কিনা এ দুচিন্তায়
রয়েছেন।

বৈলাজান গ্রামের গরু ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান বলেন, গত বছর ক্ষুদ্র খামারী ও আমার মত ছোট ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবার কি হবে বুঝতাছি না গো-খাদ্যর
দাম বেড়ে যাওয়ায় গরুর দাম বেশী । ছোট আকৃতির একটি গরু এ বছর ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার, মাঝারি আকৃতির গরুর দাম ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা এবং মোটামোটি বড়
গরু ১লক্ষ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার দাম পড়বে। এছাড়া অনেক বড় যে গুলি সেগুলি ৫ লক্ষ টাকার উপরে পড়বে ।

ফুলবাড়ীয়া বাজারের ইজারাদার খোকন মিয়া বলেন, হাটে পশু উঠা শুরু হলেও কেনা বেচা এখনও শুরু হয়ে ওঠেনি। বেশিরভাগ ক্রেতা হাটে এসে দরদাম হাঁকিয়ে কোরবানির বাজার বোঝার
চেষ্টা করছেন। যাদের বাসায় গরু ,ছাগল রাখার জায়গা আছে, কেবল তারাই এখন দামে সুবিধা হলে গরু ছাগল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। যাদের রাখার জায়গা নাই বা দেখবাল
করার লোক নাই তারা আরও পরে কিনবে । অনেকে আবার ঈদের আগের দিন কিনে নিয়ে যায়। যে কারনে এখন বেচাবিক্রি শুরু হয়নি ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে বেচাবিক্রি ততই
বাড়বে।

তিনি আরো বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও হাটে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের নিরাপত্তায় বাড়তি ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পশু চিকিৎসকও রয়েছেন। আগামী সপ্তাহ থেকেই হাটে কোরবানির পশু কেনাবেচা জমে উঠবে বলে মনে করেন তিনি। প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানূর রহমান জানান, উপজেলা কোরবানীর জন্য চাহিদা হলো ১৩ হাজার ৬শত৯টি
এর মধ্যে ৪হাজার ৮শত ৪১টি ছাগল ও ৯হাজার ৭শত৭৮টি গরু, মহিষ ৩টি , বেড়া ৬৫টি । অপর দিকে কোরবানীর জন্য পশু প্রস্তুুত রয়েছে ১৪হাজর ৬শত ৮৭টি । চাহিদার তুলনায়
১হাজার ৭৮টি প্রাণী বেশি হযেছে ।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন , জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সব সময়ই কাজ করে cএটাই তাদের কাজ বিষেশ বিশেষ সময়ে ভারতি কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আসন্ন কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখেও নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে । প্রতিটি হাটেই আইনশৃংখলা রক্ষায় পুলিশী টহল এর ব্যবস্থা করা হয়েছে এছাড়া রাস্তায় রাস্তা ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিয়মিত টহল তো আছেই ।