মো. তাসলিম উদ্দিন, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা মোরল গজারিয়া কুড়ি জল মহল বিলের সরাইল -নাসিরনগর আঞ্চলিক মহাসড়কের পুটিয়া সেতুর দুই পাশে নদীতে বাঁধ দিয়ে পানি সেচে মাছ নিধন করা হচ্ছে। সাবেক দাগ- ১০৫৭৬ বর্তমান দাগ- ৭১ পুটিয়া নদীর পুর্ব ও পশ্চিম পাশে নদীর উপর অবৈধ বাঁধ দিয়ে কয়েকটি সেচ লাগিয়ে পুরা নদী সেচে মাছ নিধনের অভিযোগ উঠেছে।এতে সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তী হাওর এলাকার উন্মুক্ত জলাশয়ে দেশীয় জাতের মাছের বংশবৃদ্ধি ও একটি সেতু হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, পুটিয়া সেতুর পূর্ব পাশে আদা কিলোমিটার ও পশ্চিম পাশের প্রায় আদা কিলোমিটারে নদীতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। বিশাল এলাকাজুড়ে পানি শুকিয়ে মাছ নিধনের পাশাপাশি কৃষিজমিতে পানির সংকটও দেখা দিয়েছে বলে অনেক কৃষকের এমন অভিযোগ।
কৃষক শুক্কুর আলী বলেন, কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ গ্রামের দুর্গাচরণ দাস মাছ ধরার জন্য নদীর এ এলাকাটি বন্দোবস্ত নিয়েছিলেন। এখন তাঁরা মাছ নিধনের জন্য সেচ দিয়ে পানি কমাচ্ছেন। তিনি বলেন,ওই দেখেন পশ্চিম পাশে যে মাটির বাধঁ দিয়েছে। ওইখান থেকে পানি শুকিয়ে মাছ ধরতে ধরতে এদিকে আসতেছে। আমরা কি বলবো কিছুদিন পরে আর জমিতে পানি দিতে পারবনা। তাই সেচের কারণে নদীর পানি কমে যাবে। সব সময় সেচ দিয়া মাছ মারে। আমরা কৃষিকাজের জন্য পানি পাই না। এদিকে দেখেন সেচের পানি না পেয়ে জমির পাশে অগভীর নলকূপ দিয়ে পানি তুলতাছে কৃষকরা। খরচো হয় কয়েক হাজার টাকা বেশী।
এদিকে কয়েক জন মৎস্যজীবী ও কৃষকদের অভিযোগ, সেচের কারণে নদীর পানি শুকিয়ে যায়, এতে কৃষিজমিতে পানির সংকট দেখা দেয়। তারা বলেন,কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ গ্রামের দুর্গাচরণ দাস সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পুটিয়া নদীতে সেচ দিয়ে নির্বিচারে মাছ নিধন করে আসছেন। এর আগেও আমরা বহুবার এমন ভাবে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছি কই কিছুই হয়নি।
সরাইল উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা(চলতি দায়িত্ব) মকসুদ হোসেন বলেন, এভাবে উন্মুক্ত গভীর জলাশয়ে সেচ দিয়ে শুকিয়ে মাছ নিধন আইন অনুসারে নিষিদ্ধ। তিনি বলেন, ‘মৎস্য আইনে স্পষ্টভাবে বলা আছে নদীর মাঝখানে স্থায়ীভাবে কোনো বেড়া বা বাঁধ দেয়া যাবে না। এতে করে দেশীয় ছোট মাছের বংশ বিস্তার হয় না।খোঁজখবর নিয়ে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ও অবৈধ বাধঁ অপসারণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নদী ইজারাদার দুর্গাচরণ দাসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,এখানে মাছ ধরার জন্য সরকারকে এক বছরের জন্য রাজস্ব দিয়েছি ১৮ লাখ ৯৪ হাজার ৭৮০ টাকা।
সেচের ব্যপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি কৌশলে বলেন,ব্রীজের পুর্ব পাশে এরা সেচ লাগিয়েছে আমি জানিনা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সওজ সড়ক উপ- বিভাগ- শাখা-৩ উপ-সহকারী প্রকৌশলী আসিফ খান বলেন,সেচ দিয়ে বাঁধ দিয়ে নিচের পানি শুকিয়ে দিলে মাটি সরে গেলে ক্ষতি হবে সেতুটির।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন বলেন, নদীতে বাঁধের বিষয়টি শুনেছেন তিনি। খুব শিগগিরই এটি অপসারণে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। নদীতে বাঁধ নিয়ে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থার কথা জানান ইউএনও।