মো. তাসলিম উদ্দিন সরাইল, (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): সরাইলে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। রোদ ও ভ্যাপসা গরমে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিদ্যুতের কোনো কোনো গ্রাহক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। অনেকে বিরক্তি প্রকাশ করে দিচ্ছেন ফেসবুকে পোস্ট।সারাদেশের ন্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল বিদ্যুৎ বিভাগ লোডশেডিং শুরু হয়েছে।
অনিয়ন্ত্রিত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনজীবন। বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের যে তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে তার কোনো কিছুই মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এক থেকে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং হওয়ার কথা। তা ছাড়া যে সময়ের কথা উল্লেখ করা হচ্ছে তার সাথেও লোডশেডিংয়ের কোনো মিল থাকছে না। এদিকে প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুৎহীন উপজেলাবাসীকে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশুরা। ঘেমে জ্বর-কাশিসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। বাদ যাচ্ছেন না মুমূর্ষ রোগীরা।তবে প্রথম দিকে এমম অবস্থা ছিলনা। এ উপজেলায় লোডশেডিংয়ের আওতায় পড়ে নাজেহাল অবস্থায় পড়েছে। সরকার ঘোষণা করেছে রাতে- দিনে অন্তত ২ঘন্টা লোডশেডিং দেওয়ার কথা থাকলেও উপজেলায় দিনে ৬ থেকে ৭ বার বিদ্যুৎ লোডশেডিং দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যুৎ অফিস তাদের ইচ্ছে মতো গ্রাহকদেরকে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের আওতায় এনে নাজেহাল অবস্থায় করে ফেলছে। বিদ্যুৎ গ্রাহকরা এখন ফোঁসে উঠেছে। গতকাল সরাইল উপজেলা আইন শৃংখলা সভায় বিদ্যুৎ নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক থেকে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং এর মধ্যে ঘন্টায় ঘন্টায় কেন লোডশেডিং দেওয়া হয় এই বিষয়টি আমাদের বোধগম্য নয়। একদিকে ভাদ্র মাস দাবা দাহ গরমে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। উচালিয়াপাড়া গ্রামের মো. কায়কোবাদ বলেন, সরকার প্রতিদিন ২ ঘন্টার লোডশেডিংয়ের কথা বলেছেন অথচ আজ ১ ঘণ্টা পর পর লোডশেডিং হয়েছে। এমন যদি প্রতিদিন হয় তাহলে আমাদের বৃদ্ধ বাবা-মা ছোট বাচ্চাদের গরমে খুব সমস্যা হয়ে যাবে।
কালিকচ্ছ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো.সুমন বলেন ১ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে ১ঘণ্টা থাকছে না এতে আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। নিজসরাইল গ্রামর আলাউদ্দিন বলেন,বার বার বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার কারণে আমার বাসার ফ্রিজে থাকা মাংসের বরফ ছেরে দিচ্ছে। এভাবে বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করলে ফ্রিজের মাছ মাংস নষ্ট হয়ে যাবে। যানাযায় সরাইলে ৫টি ইউনিয়নে ৭টি ফিটারে ভাগ করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিটি ফিটারে ১ঘন্টা বিদ্যুৎ ১ঘন্টা লোডশেডিং। কোনো কোনো ফিটারে একটানা ১ থেকে দেড় ঘন্টা লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গৃহিণী বলেন এমনিতেই প্রচন্ড গরম তারপর ঘন্টায় ঘন্টায় যায় আসে। এতে করে বয়স্কদের নিয়ে অনেক কষ্ট হচ্ছে। বাচ্চারাও ঘামাচ্ছে গরমে।
সুমা রহিমার ভাষ্য, তিনি সৌদি আরব থাকেন। প্রায় তিন বছর পর দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে স্বামীকে নিয়ে গত সোমবার বাবার বাড়িতে এসেছেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে নিয়মিত বিদ্যুৎ না থাকায় তাঁরা ঘুমাতে পারছেন না। রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
এ বিষয়ে সরাইল উপজেলা বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ(বিউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রউফ দি এশিয়ান এইজকে বলেন, আমরা ইচ্ছে করে লোডশেডিং দেয় না, আগে ১৪থেকে ১৫ মেঘাওয়াট পেতাম। এখন বিদ্যুতের ৭ মেগাওয়াটের উপরে গেলে অটো বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় ধৈর্য ধরতে হবে। অবস্থার পরিবর্তন হলে আশা করি লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।
পড়েছেনঃ ৭৮