চাঁদাবাজির দায়ে অব্যাহতি পাওয়া সেই লিমন ছাত্রদল সভাপতির ড্রাইভিং সিটে!

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে বহবকারী গাড়ি চালাতে দেখা গেছে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের অব্যাহতি পাওয়া নেতা আসিফ চৌধুরী লিমনকে। যা নিয়ে আবারও শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।
এর আগে গত বছরের ৮ আগস্ট চাঁদাবাজি, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। সেই তিনিই এখন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতির সঙ্গী হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। এতে দলীয় শৃঙ্খলা ও আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকালে ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে বহনকারী একটি গাড়ি চালাতে দেখা যায় বহিষ্কৃত নেতা আসিফ চৌধুরী লিমনকে। এছাড়াও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরকে তার সঙ্গে দেখা যায়।
একটি সূত্র জানায়, ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক সমাবেশ উপলক্ষে চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা এবং এই পুরো সময়জুড়েই আসিফ চৌধুরী লিমন তাদের প্রটোকলে থাকছেন।
বহিষ্কারের নির্দেশনা কী কাজে লাগল?
২০২৪ সালের ৮ আগস্ট চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদ থেকে বহিষ্কৃত হন আসিফ চৌধুরী লিমন। ওই সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও চাঁদাবাজির অভিযোগের ভিত্তিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা ছিল, ছাত্রদলের কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মী তার সাথে যোগাযোগ রাখবেন না।
তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সেই নেতাই কেন্দ্রীয় সভাপতির ড্রাইভারের ভূমিকায় আছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রদল নেতা বলেন, “একজন বহিষ্কৃত নেতা যদি সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের গাড়ি চালান, তাহলে বহিষ্কার আদেশের বাস্তব প্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। এতে করে শৃঙ্খলা আর আদর্শের জায়গায় দুর্বলতা প্রকাশ পায়।”
এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এক তরুণীর করা ধর্ষণ মামলাতেও আসিফ চৌধুরী লিমনের নাম উঠে আসে। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে। যদিও তখন লিমন এসব অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, “বহিস্কৃতদের কোনো সাংগঠনিক দায়িত্ব নেই। তারা বর্তমানে সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে নাই।  ব্যক্তিগতভাবে যেতে পারে সেখানে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
তবে বিশ্লেষকদের মতে, বহিষ্কৃত নেতাদের পুনরায় ঘনিষ্ঠ পরিসরে জায়গা দেওয়া হলে দলীয় শৃঙ্খলার বার্তা দুর্বল হয়ে পড়ে। নেতাকর্মীরা বিভ্রান্ত হয় এবং জনসাধারণের কাছে নেতিবাচক ইমেজ তৈরি হয়।