
সময়ের নিউজ ডেস্কঃ প্রকৃতিতে বসন্তের পূর্বাভাস। রঙিন সাজে সজ্জিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসের ব্যবসায় অনুষদ প্রাঙ্গণ। এ যেন এক মহামিলনমেলা। গতকাল শনিবার সকাল থেকে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে নবীন-প্রবীণের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।‘সাফল্যের উচ্ছাসে ম্যানেজমেন্ট পঞ্চাশে’ প্রতিপাদ্যে উদযাপিত হয়েছে এই সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব। সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে শুরু হয় এই উৎসব। এরপর ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের সামনে বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শুরু হয় সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভা।
সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহবায়ক দি পূর্বকোণ লিমিটেডের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি প্রফেসর আবু মুহাম্মদ আতিকুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ হারিসুর রহমান হাওলাদার ও সহকারী অধ্যাপক সেতু রঞ্জন বিশ্বাস।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের মধ্যে অন্যতম সমৃদ্ধ ম্যানেজমেন্ট বিভাগ। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় এ বিভাগের প্রথিতযশা শিক্ষকরা তাদের মেধা ও দক্ষতার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। এসব শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের মেধা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আজিম আরিফ, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রাক্তন সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এফ এম আওরঙ্গজেব, চবি সাবেক উপাচার্য ও ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার, ব্যবসায় অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হেলাল উদ্দিন নিজামী, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রফেসর ড. জাহেদ হোছাইন সিকদার, সাবেক প্রফেসর এ এন আর এম বোরহান উদ্দিন, প্রফেসর ড. আব্দুল আউয়াল খান ও প্রফেসর ড. ফয়সাল উদ্দিন।
সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদমিনার প্রাঙ্গণ এবং বুদ্ধিজীবী চত্বর সাজানো হয়েছিল বর্ণিল সাজে। ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। বুদ্ধিজীবী চত্বরে বসেছে বেশ কয়েকটি দোকান এবং বুথ। যেখানে মিলেছে হরেক রকমের খাবার। বিশেষ করে ভাপা পিঠা, ফলের রস, রঙ চায়ের দোকানগুলোতে ছিলো নবীণ-প্রবীণদের ভিড়। শীতের মাঝে পুরো এলাকায় যেন বসন্তের ছোঁয়া। কারও পরনে পাঞ্জাবি-পায়জামা, কারও পরনে শাড়ি, কেউবা মাথায় গুঁজেছেন ফুল, কারও বা আবার হাতে ফুলের কুঁড়ি।
দিনব্যাপী এই সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবকে প্রাণের উৎসবে পরিণত করে রেখেছিলেন সাবেক শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন পর মায়া জড়ানো এই প্রাণের ক্যাম্পাসে আসতে পেরে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকেই। এদের কেউ ঘুরেছেন পুরোনো ক্লাসরুম ও আবাসিক হলে। কেউবা মেতেছিলেন ছবি তোলার উৎসবে। আবার অনেকে প্রিয় বন্ধুদের সান্নিধ্য পেয়ে উচ্ছাসিত। উৎসবের অনুভূতি ব্যক্ত করে বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীরা বলেন, ‘এই সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা খুবই উচ্ছসিত, উল্লাসিত। খুব মজা করছি আমরা। আমরা চাই, এরকম আয়োজন বারবার হোক, আমরা অনুপ্রাণিত হই তাদেরকে দেখে।’